ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিলকে ধর্ষণের ভুয়া মামলায় ফাঁসিয়ে দিল কারা?

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারী ২০২১ ০৬:৫০; আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৪ ১০:১৩

সিনিয়র প্রতিবেদক নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের জন্মস্থান। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শিক এলাকা হিসাবে পরিচিত। ২০০১ সালে যখন সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের গণজোয়ার চলছে, ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসলো তারা, তখনো নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসনটি পেয়েছিল আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজু।

রায়পুরার অবিসংবাদিত নেতা রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজু যাকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসাবে মনোনীত করেছিলেন, সেই ছেলেটার নাম আসাদুল হক চৌধুরী শাকিল। এই শাকিলের পিতা একজন স্বনামধন্য শিক্ষক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই দশক ধরে রাজনীতি করছেন।

এমনকি তিনি অত্যন্ত সুনামের সাথে রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং শেখ হাসিনাকে নেত্রী মেনে রায়পুরা আওয়ামী লীগের কর্ণধার রাজি উদ্দিন রাজুকে নেতা মানায় কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিলের।

শুধু শাকিল নয়, তার পুরো পরিবারকে হেয় প্রতিপন্ন করতে রায়পুরাতে নব্য আওয়ামী লীগার কয়েকজন এবং পুলিশের সাথে বিএনপির একটি সিন্ডিকেট মিলে ভুয়া ধর্ষণ মালমা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে উঠে পরে লেগেছে। রায়পুরার একাধিক নির্ভরযোগ্য এবং ধর্ষণ মামলার বাদী লিনা তাপসী তামান্না নিজেই স্বীকার করেছেন, গত বছরের ২৩ অক্টোবর রায়পুরা থানায় যে ধর্ষণ মামলাটি করা হয়েছিল সেটি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের স্বার্থ হাসিলের জন্য সেটি করেছিল।

মামলা নং-৩৫ (১০), ২০০২, জি আর মামলা নং-৩৮২/২০২০। পুরো মামলাটি মিথ্যা ও সাজানো বলে একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন তামান্না। এমনকি শাকিল ঘটনার দিন সেখানে উপস্থিতই ছিল না বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, দশম শ্রেণীর ছাত্রী এই তামান্নার আগেও দুইটি বিয়ে হয়েছে। দুইজন সাবেক স্বামীর সঙ্গেই তার তালাক হয়েছে। ধর্ষণ মামলার পর মেডিকেল রিপোর্টে শাকিলের সঙ্গে বাদীর কোনো ধরণের সঙ্গম বা দৈনিক সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়াও যায়নি। ফলে মহামান্য আদালত মাত্র ৯ দিনের মধ্যেই শাকিলকে জামিন দিয়েছে।

মামলার আসামি শাকিল বলেছেন, আমি পুরোপুরি নির্দোষ। আমার অপরাধ আমি শুধু আমি আওয়ামী লীগের এমপি রাজি উদ্দিন রাজুর পক্ষে কাজ করি। ছাত্রলীগের সভাপতি হিসাবে এমপির কথা শুনি বলেই নব্য আওয়ামী লীগার এবং বিএনপির লোকজন মিলে আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আমি সৎ সাহস নিয়ে বলতে পারি, ছাত্রলীগ করি বলেই আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে একটি মহল।

আমি জামিন পাওয়ার পর থেকেই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় শীর্ষ দুই নেতাকে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু এরিমধ্যে ছাত্রলীগের জেলার দুইজন শীর্ষ নেতা আমার মামলা জনিত কারণে সেখানে একজন ভারপ্রাপ্ত সহ সভাপতি করে। তাই এ অবস্থায় আমি ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েও কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারছি না। আমি চাই আমাকে আবারো স্বপদে বহাল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা কেন্দ্রের মাধ্যমে জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করেন।

আমি যদি দোষী হই, তাহলে আমাকে যে শাস্তি দিবে, সেটাই আমি মাথা পেতে মেনে নিবো। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ভোরের পাতাকে বলেন, বিষয়টি আমি পুরোপুরি জানি। ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী যারা বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার আদর্শিক রাজনীতি করে তারা কখনোই ধর্ষক হতে পারে না।

এলাকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে যদি শাকিলকে ভুয়া ধর্ষণ মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া হয়, তাহলে তাকে অবশ্যই স্বপদে বহাল করা হবে। এমনকি আমরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিষয়টার ছায়া তদন্ত করেও দেখেছি। এমনকি মেডিকেল রিপোর্ট, ধর্ষিতার ভিডিও আমাদের কাছে এসেছে। আমরা খুব দ্রুতই নরসিংদী জেলার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে বলে দিবো, যেন কোনা ক্লিন ইমেজের ছাত্রলীগের নেতাকে তার যোগ্য পদ থেকে সরিয়ে দেয়া না হয়।



বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top